বার্তা সম্পাদক- এস এম ফজলে রাব্বী শুভ:-
জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু অনেক কার্ডে তথ্য ভুল থাকায় সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় চাকরি হচ্ছে না, কেউ বেতন পাচ্ছেন না, কেউবা ব্যাংকের নিয়মের গ্যাঁড়াকলে পড়ে টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না। পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় অনেক হতদরিদ্র ভিজিএফ সহ বিভিন্ন ত্রাণ নিতে পারছেন না। এরকম অসংখ্য সমস্যায় সম্মুখীন ধুনট উপজেলার সাধারণ মানুষ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এই ভুলের জন্য ইসির কর্মীরাই দায়ী। তাদের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। কার্ডের তথ্য সংশোধনের জন্য গুনতে হচ্ছে টাকা। সঙ্গে ভোগান্তি তো আছেই। কার্ড সংশোধনে মাসের পর মাস ও অনেক ক্ষেত্রে বছরও লেগে যাচ্ছে। এমন অবস্থার জন্য দায়ী কে? অদক্ষ কর্মী ও দায়িত্বে অবহেলার জন্য এই ভুলের ছড়াছড়ি। জাতীয় পরিচয়পত্র এখন সব ধরনের কাজেই ব্যবহিত হচ্ছে, ব্যাংক একাউন্ট খোলা ও পাসপোর্ট নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজে বেশ কয়েক বছর ধরেই ব্যবহৃত হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র।
সম্প্রতি মোবাইল ফোনে সীম রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রেও এটি জমা দেওয়ার নিয়ম চালু হয়েছে।শুধু সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীই নয়, ভুল পাওয়া যাচ্ছে অন্যদের পরিচয়পত্রেও। আর এতে করে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বহু মানুষ।
ধুনট উপজেলা গেটে এক কম্পিউটার এন্ড ফটোষ্ট্যাটের দোকানে গ্রাম থেকে আসা সাইফুল ইসলাম এর সাথে কথা হচ্ছিলো, পাশে একজন বয়স্ক মহিলা সহ আরো তিন জন ছিলো। তারা সবাই একই কাজে এসেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সাড়াতে। সাইফুল ইসলাম বলেন তার বাবার নাম ভুল করার কারণে এখন সংশোধনের আবেদন করতে এসেছি। আমার বাবার নাম মোশারফ কিন্তু এখানে নাম এসেছে মোসলেম উদ্দিন। এবার বয়স্ক মহিলাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার কি সমস্যা, তিনি সম্ভবত কানে কম শোনেন। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম আপনার কি সমস্যা, তিনি কান্না বিজরীত কন্ঠে বললেন বাবাগো আমার স্বামী অনেক আগে মারা গেছে, আমার বয়স হয়ে গেছে, সরকার দশ টাকা কেজি দরে চাউল দেয়, আমার কার্ড আছে, সেইদিন চাউল নিতে গেছিলাম তারা কইলো আইডি কার্ড নাকি ভুল আছে, তখন তার কার্ডটি হাতে নিলাম, দেখি তার নাম আছিয়া বেওয়া লেখা, তাকে বললাম আপনার নাম কি তখন তিনি বললেন, আমার নাম বুলি খাতুন, আমার মায়ের নাম আছিয়া বেওয়া। এই চিত্র দেখে মনে প্রশ্ন জাগলো ভুল করছে তারা আর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এই সব সাধারণ মানুষের। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন অফিসার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এমন ভুল হওয়া পরিচয় পত্র অনেক আসছে, আসলে এমন ভুল যে কি ভাবে হচ্ছে বুঝে উঠতে পারছিনা। তবে অচেরেই এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
ধন্যবাদ,
আপনার মন্তব্যের জন্য।